মিয়া আবদুল হান্নান : সাংবাদিক আজিজ ফারুকীকে অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে বিএফইউজে ও ডিইউজে’র বিক্ষোভ সমাবেশ, বন্ধ গণমাধ্যম খুলে না দিলে সরকারের পরিণাম ভয়াবহ ও কঠিন হবে। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম এক ভয়ঙ্কর সময় পার করছে। একের পর এক সরকার মিডিয়া বন্ধ করে দিচ্ছে। সাংবাদিকদের উপর হামলা ও মামলা দিয়ে নির্যাতন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার সিনিয়র ফটো সাংবাদিক আজিজ ফারুকীকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। এভাবে গণমাধ্যম বন্ধ করে ও সাংবাদিকদের নির্যাতন করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। কাজেই অবিলম্বে সকল বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন, আজিজ ফারুকীসহ সব কারাবন্দী সাংবাদিককে মুক্তি দিন। তানাহলে আপনাদের পরিণাম ভয়াবহ ও কঠিন হবে।
সিনিয়র ফটো সাংবাদিক আজিজ ফারুকীর মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র আয়োজনে আজ ১৪ মার্চ মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে`র) সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, (বিএফইউজে) মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন ও জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি হাসান হাফিজ, বিএফইউজের সহ সভাপতি ওবাইদুর রহমান শাহীন, কোষাধ্যক্ষ খায়রুল বাশার, সাংগঠনিক সম্পাদক খুরশীদ আলম, ফটো জার্ণালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি একেএম মহসীন, সহ সভাপতি নাসিম শিকদার, ডিইউজের সহ সভাপতি শাহীন হাসনাত, যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহজাহান সাজু, কোষাধ্যক্ষ মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক গাযী আনোয়ার, ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, দফতর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, নির্বাহী সদস্য শহীদুল ইসলাম, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী, সাবেক নির্বাহী সদস্য এইচ এম আলামিন, সদস্য ইকবাল মজুমদার তৌহিদ, আবু হানিফ, তাজুল ইসলাম।
ডিইউজের প্রচার সম্পাদক খন্দকার আলমগীর হোসাইনের সঞ্চালনায় এছাড়া সবাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন- ডিইউজের সহ সভাপতি রাশেদুল হক, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, দৈনিক এশিয়া বাণী ইউনিট প্রধান ও কাউন্সিলর মিয়া আবদুল হান্নান, ডিপুটি ইউনিট প্রধান মোঃ নাদিম মাহমুদ, বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য আব্দুস সেলিম, জাকির হোসেন, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য আবুল হোসেন খান মোহন, কাজী তাজিম উদ্দিন,রফিক লিটন প্রমুখ।
বার বার কারানির্যাতিত সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী বলেন, সাংবাদিকদের কাজ হলো সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করা। ফটো সাংবাদিক আজিজ ফারুকী অফিসের অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিল। সেখান থেকে পুলিশ কোনো কারণ ও মামলা ছাড়া তাকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। তার সাথে থাকা ক্যামেরা ও মোবাইল কেড়ে নিয়েছে। এই ঘটনা থেকে আবারো প্রমাণিত হলো এই সরকারের কাছ গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আসা করা যায় না। ফ্যাসিস্ট কায়দায় সরকার জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। অবিলম্বে আজিজ ফারুকীকে মুক্তি দিন। দিনকালসহ সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন। তানাহলে আপনাদের কঠোর জবাব দিতে সাংবাদিক সমাজ বাধ্য হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এম আবদুল্লাহ বলেন, গণমাধ্যমের খুনি সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য আমরা সাংবাদিকরা রাজপথ ছাড়তে পারছি না। আমরা দিনকাল বন্ধের প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। এরই মধ্যে একজন সিনিয়র সাংবাদিক আজিজ ফারুকীকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ক্যামেরা ও মোবাইর কেড়ে নিয়ে অন্যায়ভাবে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এ ঘটনায় কয়েকজন পুলিশের জন্য গোটা পুলিশ বাহিনী প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। আপনারা এসব হামলা মামলা গ্রেফতার বন্ধ করুন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিন, দিনকালসহ সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন, আজিজ ফারুকীসহ সকলের নিঃশর্ত মুক্তি দিন। তানাহলে আপনাদের পরিণতি হবে ভয়াবহ ও কঠিন। দৈনিক এশিয়া বাণীর বার্তা সম্পাদক- নুরুল আমিন রোকন বলেন, এই সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই মিডিয়া বন্ধ করে বাক স্বাধীনতা কেড়ে নেয়। এখনও তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। এরই অংশ হিসেবে দিনকাল বন্ধ করেছে। এবার সিনিয়র সাংবাদিক আজিজ ফারুকীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। হামলা মামলা করে কোনো সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। এই সরকারও টিকতে পারবে না। অবিলম্বে দিনকালসহ সব বন্ধ মিডিয়া খুলে দিন, আজিজ ফারুকীসহ সকল কারাবন্দী সাংবাদিককে মুক্তি দিন। কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম এক ভয়ঙ্কর সময় পার করছে। একের পর এক গণমাধ্যম বন্ধ করে হাজার হাজার সাংবাদিকদের বেকার করে দিয়েছে। সাংবাদিকদের উপর হামলা করে ও মামলা দিয়ে নির্যাতন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজিজ ফারুকীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। পাগলা কুকুর যাকে খুশি তাকে কামড়ায়। এই সরকারও পাগলা হয়ে গেছে। সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য সংবিধান, আদালত ও প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। অবিলম্বে দিনকালসহ সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন, আজিজ ফারুকীসহ সব কারাবন্দী সাংবাদিককে মুক্তি দিন, তানাহলে এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে না বলতে হবে, লাল কার্ড দেখাতে হবে।
মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট, গুম-খুনের কথা যাতে জনসমক্ষে উন্মোচিত হতে না পারে, সে জন্য একের পর এক পত্রিকা বন্ধ করে দিচ্ছে সরকার। সাংবাদিকদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সিনিয়র ফটো সাংবাদিক আজিজ ফারুকীকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে অন্যায়ভাবে পুলিশ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। এভাবে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করে এ সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। অবিলম্বে আজিজ ফারুকীকে মুক্তি দিন। দিনকালসহ সব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন।
|