মাত্র ৩৫ ও ৪৯ রুপিতে করোনার ওষুধ মিলছে ভারতের বাজারে!
কভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ফ্যাভিপিরাভির সস্তায় মিলবে ভারতের বাজারে। মঙ্গলবার দেশটির সান ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড জানিয়েছে, `তারা শীঘ্রই নিজেদের তৈরি ফ্যাভিপিরাভির-সমৃদ্ধ ওষুধ ভারতের বাজারে বিক্রি শুরু করবে। এই ওষুধটি করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে।`
বুধবার আরেক ওষুধ প্রস্তুতকারি সংস্থা লিউপিন জানিয়েছে ফ্যাভিপিরাভির ট্যাবলেট তারাও আনছে বাজারে ৷ কম এবং মাঝারি করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় কার্যকরি এই ওষুধ তারা বাজারে নিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছে কম্পানিটি ৷
কভিড-১৯ চিকিৎসায় সান ফার্মা বাজারে আনা ওষুধের নাম `ফ্লুগার্ড`৷ ফ্লুগার্ড (ফ্যাভিপিরাভির ২০০ এমজি) ভারতের বাজারে ৩৫ রুপিতে পাওয়া যাবে প্রতিটি ট্যাবলেট। এটি করোনা ভাইরাসের হাল্কা বা মাঝারি উপসর্গে কাজ দেবে। এই ওষুধটি আসলে জাপানের একটি সংস্থা ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য তৈরি করেছিল। লুপিনের তৈরি ফ্যাভিপিরাভির ট্যাবলেটের দাম ৪৯ রুপি৷ এটার নাম `কোভিহল্ট` (ফ্যাভিপিরাভির ২০০ এমজি)৷ এক পাতায় থাকছে ১০টি ট্যাবলেট ৷
ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে ৷ গত কয়েকদিনে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ হাজারের বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। যা যথেষ্ট চিন্তার কারণ ৷ এই অবস্থায় ফ্যাভিপিরাভির ওষুধ ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার ছাড়পত্র পেয়েছে ৷ কভিড–১৯ চিকিৎসায় এখনো পর্যন্ত সরকারি ভাবে ফ্যাভিপিরাভির এবং রেমডেসিভির সমৃদ্ধ অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলোকে ছাড়পত্র দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
সূত্র : নিউজ ১৮।
|
কভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ফ্যাভিপিরাভির সস্তায় মিলবে ভারতের বাজারে। মঙ্গলবার দেশটির সান ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড জানিয়েছে, `তারা শীঘ্রই নিজেদের তৈরি ফ্যাভিপিরাভির-সমৃদ্ধ ওষুধ ভারতের বাজারে বিক্রি শুরু করবে। এই ওষুধটি করোনা চিকিৎসায় ব্যবহৃত হবে।`
বুধবার আরেক ওষুধ প্রস্তুতকারি সংস্থা লিউপিন জানিয়েছে ফ্যাভিপিরাভির ট্যাবলেট তারাও আনছে বাজারে ৷ কম এবং মাঝারি করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় কার্যকরি এই ওষুধ তারা বাজারে নিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছে কম্পানিটি ৷
কভিড-১৯ চিকিৎসায় সান ফার্মা বাজারে আনা ওষুধের নাম `ফ্লুগার্ড`৷ ফ্লুগার্ড (ফ্যাভিপিরাভির ২০০ এমজি) ভারতের বাজারে ৩৫ রুপিতে পাওয়া যাবে প্রতিটি ট্যাবলেট। এটি করোনা ভাইরাসের হাল্কা বা মাঝারি উপসর্গে কাজ দেবে। এই ওষুধটি আসলে জাপানের একটি সংস্থা ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য তৈরি করেছিল। লুপিনের তৈরি ফ্যাভিপিরাভির ট্যাবলেটের দাম ৪৯ রুপি৷ এটার নাম `কোভিহল্ট` (ফ্যাভিপিরাভির ২০০ এমজি)৷ এক পাতায় থাকছে ১০টি ট্যাবলেট ৷
ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে ৷ গত কয়েকদিনে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০ হাজারের বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। যা যথেষ্ট চিন্তার কারণ ৷ এই অবস্থায় ফ্যাভিপিরাভির ওষুধ ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার ছাড়পত্র পেয়েছে ৷ কভিড–১৯ চিকিৎসায় এখনো পর্যন্ত সরকারি ভাবে ফ্যাভিপিরাভির এবং রেমডেসিভির সমৃদ্ধ অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলোকে ছাড়পত্র দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
সূত্র : নিউজ ১৮।
|
|
|
|
বাংলাদেশে চীনের সিনোভেক কোম্পানির তৈরি নতুন করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকার তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি)। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) দেশের সাতটি হাসপাতালের দুই হাজার ১শ জন স্বাস্থ্যকর্মীর উপর এর ট্রায়াল চালাবে।
বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি) সূত্রে জানা যায়, আইসিডিডিআর,বি দেশের সাতটি হাসপাতালে টিকা পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে অনুমোদন চেয়েছে। অধিদপ্তর অনুমোদন দিলে মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল বার্ন ইউনিট-১, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ইউনিট-২ এবং ঢাকা মহানগর হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর টিকা প্রয়োগ করা হবে।
বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) পরিচালক ডা. মাহমুদ-উজ-জাহান বাংলানিউজকে বলেন, চীনের সিনোভেক রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড কোম্পানির তৈরি টিকার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার জন্য আইসিডিডিআর,বি আমাদের কাছে প্রটোকল জমা দিয়েছিল। এটি ন্যাশনাল রিসার্চ এথিকস কমিটি অনুমোদন দিয়েছে।
তিনি বলেন, আইসিডিডিআর’বির পক্ষ থেকে যে প্রটোকল দেওয়া হয়েছে, তাতে ৪ হাজার ২শ জনের ওপর এ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে বলে উল্লেখ ছিল। তবে ৪ হাজার ২শ জন টিকা পাবেন না। এদের মধ্যে অর্ধেক টিকা পাবেন, অর্ধেক পাবেন না। এটাই গবেষণার নিয়ম।
আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশে চীনের ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল মানে এটা নিয়ে গবেষণা হবে। চীনা ভ্যাকসিন ট্রায়ালে দেখা হবে, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে এই ভ্যাকসিনটা দিলে তার ভেতরে যে এন্টিবডি তৈরি হবে সেটার প্রটেক্টিভিটি ক্ষমতা কতটুকু, এই ভ্যাকসিন দিয়ে দেশের মানুষের কোনো অসুবিধা কিংবা ক্ষতি হবে কিনা, এটার গ্রহণযোগ্যতা কেমন। ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ও গ্রহণযোগ্যতা এ দু’টি বিষয় দেখাই হলো মূল উদ্দেশ্য।
‘এটি মানুষের কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্য। অর্থাৎ, ভ্যাকসিনটি নিলে কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া কিংবা কোনো সমস্যা আছে কিনা। এছাড়া তাৎপর্যপূর্ণ সংখ্যায় প্রতিরোধ ক্ষমতা মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে কিনা। এটা হলো কার্যকারিতা। এই দু’টি বিষয় তখন পাওয়া যাবে, তারপরে প্রশ্ন হলো এই ভ্যাকসিনটা বাংলাদেশ প্রয়োগ করা যায় কিনা? তখন এটি রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত। সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ’
তিনি বলেন, সাধারণত ভলান্টিয়ারদের মধ্যে এই ভ্যাকসিন ট্রায়াল দেওয়া হয়। যাদের বয়স ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে ৬০ বছরের নিচে হতে হবে। তাদের সবাইকে স্বাভাবিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে, যাদের মধ্যে করোনার সংক্রমণ নেই- এরকম কিছু ক্রাইটেরিয়া আছে তাদের উপর প্রয়োগ করতে হবে।
ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, গবেষণা শেষে বিজ্ঞানীরা একটা প্রস্তাবনা দেবেন। এই ভ্যাকসিনটা কার্যকরী অথবা কার্যকরী নয়। যদি কার্যকরী না হয় তাহলে এটি ব্যবহারের প্রশ্নই থাকবে না। আর যদি কার্যকরী হয়, তখন সরকার বিবেচনা করবে এই ভ্যাকসিনটা বাংলাদেশে ব্যবহার করা যাবে কিনা। এছাড়াও অন্য যেসব ভ্যাকসিন যেমন বাংলাদেশে ভ্যাকসিন আছে কিংবা ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড, জার্মানি, ভারতের ভ্যাকসিন তৈরি করছে। সেগুলোও মূল্যায়ন করা হবে। এই মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে যদি চায়নিজ ভ্যাকসিনটা বেশি কার্যকরী হয় তাহলে চীনের ভ্যাকসিন বাংলাদেশ গ্রহণ করবে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে এসব দেশের সব মানুষকে টিকা দেওয়ার মতো মজুদ শিগগিরই গড়ে তুলতে পারবে না সংস্থাটি। প্রতিটি দেশের ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের অগ্রাধিকারের তালিকা তৈরি হচ্ছে। এই তালিকার শীর্ষে আছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
জানা যায়, সারা বিশ্বে করোনার টিকা বানাতে এখন অন্তত ১৬০টি উদ্যোগ চালু রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র দু’টি টিকা তৃতীয় ধাপে আছে। সিনোভেকের এ টিকার পাশে তৃতীয় ধাপে আছে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে করোনার সংক্রমণ শুরু হয়েছিল গত ডিসেম্বরে। ভাইরাস প্রতিরোধে চীন শুরু থেকে যেসব উদ্যোগ নিয়েছিল, তার মধ্যে টিকা উদ্ভাবনের প্রচেষ্টাও ছিল। সিনোভেক বায়োটেক এক্ষেত্রে এগিয়ে। তাদের টিকার সম্ভাব্য নাম ‘করোনাভেক’।
|
|
|
|
আগস্টে রাশিয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রয়োগ সফল হলে, বাংলাদেশও ভ্যাকসিন পেতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দেশটিতে থাকা বাংলাদেশি চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, একাধিক হিউম্যান ট্রায়ালে- শতভাগ নিরাপদ এ ভ্যাকসিন রোগীর শরীরে কার্যকরী অ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম।
মানবদেহে শতভাগ কার্যকরী কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রস্তুত করে এখন আলোচনায় ভ্লাদিমির পুতিনের দেশ। রাশিয়ার গামালেই ইনস্টিটিউট অব এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি`র উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন কয়েকটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে শতভাগ সফল হওয়ায়, আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহারের প্রস্তুতি চলছে।
রাশিয়ায় বাংলাদেশি চিকিৎসকরা বলছেন, দেশব্যাপী মধ্য আগস্ট থেকে এই ভ্যাকসিন ব্যবহার শুরু হবে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক বে-নজির আহমেদ মনে করেন, প্রতিযোগিতার বাজারে রাশিয়া অনেকখানি এগিয়ে গেছে।
রুশ গবেষকরা বলছেন, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য কিংবা জার্মানি যেসব ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে, তাদের থেকেও নিরাপদ হলো রাশিয়ার ভ্যাকসিন। যা আশার আলো দেখাচ্ছে বিশ্ববাসীকে।
|
|
|
|
ঢাকা শহরে মেট্রোরেলের রুট বিস্তারে সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশের অন্যতম বন্ধু রাষ্ট্র জাপান। ইতোমধোই জাপানের ঋণে মেট্রোরেল লাইন-৬-এর আওতায় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এ পর্যন্ত এ প্রকল্পের অগ্রগতি ৪৪.৬৭ শতাংশ। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন বর্ষ ২০২১ সালের বিজয় দিবসে এই মেট্রোরেল উদ্বোধনের পরিকল্পনা আছে।
২০১২ সালে গৃহীত হয় মেট্রোরেল প্রকল্প। এ প্রকল্পের দৈর্ঘ্য উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০.১ কিলোমিটার। প্রকল্পের মোট ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকার মধ্যে সাহায্য হিসেবে জাপান সরকারের উন্নয়ন সংস্থা জাইকা ঋণ দিচ্ছে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যয় বিবেচনা করে আরো দুটি মেট্রোরেল লাইন ১ ও ৫ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পাশ হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই দৃশ্যমান হবে এ দুই প্রকল্পের কাজ। নতুন এ দুটি মেট্রোরেলে জাপান বাংলাদেশকে আরো ৬৪ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা ঋণ দিতে চলেছে। সহজ শর্তে এ ঋণ দিচ্ছে জাপানের সরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাইকা। অবকাঠামো খাতের জন্য এর সুদ হার হবে ১ শতাংশ। তবে স্বাস্থ্য ও সেবা খাতের জন্য সুদ হার যথাক্রমে ০.৯ শতাংশ ও ০.১ শতাংশ। দশ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে পরিশোধ করতে হবে এ ঋণ। গ্রেস পিরিয়ডের আওতায় প্রথম ১০ বছর সুদ ছাড়াই মূল ঋণের অংশ পরিশোধ করতে হবে।
এ ঋণ প্রসঙ্গে অর্থনৈতিক সর্ম্পক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তরা জানান, বিভিন্ন প্যাকেজের আওতায় বাংলাদেশকে একসঙ্গে দেওয়া এই সহায়তা হবে জাপান সরকারের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার এখন পর্যন্ত দেওয়া সর্বোচ্চ সাহায্য। দ্রুত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে এ ঋণচুক্তি। এ বিষয়ে ইআরডি ও জাইকার মধ্যে সব ধরনের পদেক্ষপ নেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ইআরডি’র যুগ্মসচিব (জাপান-আমেরিকা উইং) মোহাম্মদ আশরাফ আলী ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, নতুন দুই মেট্রোরেল প্রকল্পে জাপান বাংলাদেশকে ঋণ দিচ্ছে। এখনও চুক্তি হয়নি। আমরা ঋণচুক্তির জন্য কাজ করছি। সব কিছু ফাইনাল করেই আপনাদের জানানো যাবে। সব চূড়ান্ত করার আগে মন্তব্য করা যাবে না।
সূত্র জানায়, ঢাকাবাসীর জন্য আরো একটি মেট্রোরেল প্রকল্প এমআরটি-১ এর রুট নির্মিত হতে চলেছে। ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা ব্যয় ধরে এ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে।। এর আওতায় এয়ারপোর্ট থেকে কমলাপুর ও নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত মোট ২৭.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এলাইনমেন্ট ঠিক করা হয়।
এমআরটি লাইন-০১-এ এয়ারপোর্ট-খিলক্ষেত-যমুনা ফিউচার পার্ক-নতুনবাজার-বারিধারা-উত্তর বাড্ডা-হাতিরঝিল-রামপুরা-মৌচাক হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত ১৬.২ কিলোমিটার এবং অন্যটি নতুনবাজার-যমুনা ফিউচার পার্ক-বসুন্ধরা-পুলিশ অফিসার হাউজিং সোসাইটি-মাস্তুল-পূর্বাচল পশ্চিম-পূর্বাচল সেন্ট্রাল-পূর্বাচল সেক্টর-৭-পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত ১১.৩ কিলোমিটার রুট নির্মিত হবে। এই প্রকল্পে জাইকা ঋণ দেবে ৩৩ হাজার ৯১৪ কোটি ১১ লাখ টাকা। প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদ চলতি সময় থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ব্যয় বিবেচনায় এটি ফাস্ট-ট্র্যাক প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত হলো। ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে প্রকল্পের আওতায় ৫৯১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
আরো দুই মেট্রোরেলে ৬৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে জাপান
মেট্রোরেল লাইন-৫: মেট্রোরেল লাইন-৫ প্রকল্পের মোট ব্যয় ৪১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। নতুন এই মেট্রোরেলের এলাইনমেন্ট হলো- হেমায়েতপুর-বালিয়ারপুর-মধুমতি-আমিনবাজার-গাবতলী-দারুসসালাম-মিরপুর-১-মিরপুর-১০-মিরপুর-১৪-কচুক্ষেত-বনানী-গুলশান-২-নতুনবাজার থেকে ভাটারা পর্যন্ত। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২৮-এর ডিসেম্বর মেয়াদে প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন হবে। হেমায়েতপুর থেকে গাবতলী হয়ে ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘের এ লাইনটির ১৪ কিলোমিটার হবে পাতাল রুট; বাকি ছয় কিলোমিটার এলিভেটেড রুট। ফলে একই রুটে পাতাল ও উড়াল ব্যবস্থার সমন্বয়ে মেট্রোরেল হবে। প্রস্তাবিত এমআরটি রুট-৫-এ (নর্দান রুট) ১৪টি স্টেশন থাকবে। এর মধ্যে নয়টি স্টেশন হবে আন্ডারগ্রাউন্ডে, বাকি পাঁচটি স্টেশন থাকবে মাটির ওপরে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে জাইকা দেবে ৩০ হাজার ৭৫৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
অন্যদিকে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প-১ ও মাতারবাড়ি আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল-ফায়ারড পাওয়ার প্রজেক্ট-৫ প্রকল্পে ৮৪ কোটি ডলার ঋণ দেবে জাপান। এ ঋণচুক্তি বাংলাদেশেই অনুষ্ঠিত হবে।
বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুকে রক্ষা করতেই এবার এর পাশে আলাদাভাবে ডুয়েলগেজ রেলসেতু নির্মাণ করা হবে। বঙ্গবন্ধু সেতু বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে দুই অংশকে একত্রিত করেছে। সড়কের পাশাপাশি সেতুতে রেল সংযোগও রয়েছে। তবে এই রেল সংযোগ বর্তমানে না থাকার সমতুল্য। সেতুতে ট্রেন চলে কচ্ছপ গতিতে। ইচ্ছে করলে কোনো যাত্রী দৌঁড়ে ট্রেনের আগেই সেতু পার হতে পারবেন। এর আগে কয়েকবার সেতুতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন যাত্রীরা। কারণ দুষ্কৃতিকারীরা ট্রেন আউটার সিগনালিং খাঁচা ভেঙে ফেলেছে। সব মিলিয়ে বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুতে ৪.৮ কিলোমিটার রেল সংযোগ এখন এক আতঙ্কের নাম।
নতুন প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। এ প্রকল্পে জাপানের উন্নয়ন সহযোগিতা প্রতিষ্ঠান জাইকা ৭ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা দেবে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। সম্পূর্ণ স্টিল দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হবে। হেলথ সার্ভিস স্ট্রেংদেনিং প্রকল্পের আওতায় জাপানে ৮ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি অনুষ্ঠিত হবে।
গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে ঋণচুক্তি প্রসঙ্গে ইআরডি’র ঊর্ধতন এক কর্মকর্তা বলেন, চুক্তির আগে কোনো নিউজ হলে জাইকা বিষয়টা ভালোভাবে নেয় না। তারা (জাইকা) আগাম কোনো তথ্য লিক হোট এটা চায় না। তাই ঋণচুক্তির বিষয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করা যাবে না। তবে এটা বলতে পারি, খুব দ্রুত প্রকল্পগুলোর ঋণচুক্তি অনুষ্ঠিত হবে। আমরা এ বিষয়ে সবাই কাজ করছি। জাইকার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।
|
|
|
|
দেশে প্রথম প্রতিষ্ঠান হিসেবে করোনাভাইরাসের টিকা (ভ্যাকসিন) আবিষ্কারের দাবি করেছে গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ অব কোম্পানিজ লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, প্রতিবন্ধকতার শিকার না হলে আগামী ডিসেম্বরে বাজারে টিকা আনতে পারবে তারা। প্রথম ধাপে ৫০ থেকে ৭০ লাখ টিকা উৎপাদন করবে দেশীয় এ প্রতিষ্ঠানটি।
বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এসব তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়, অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে থাকা তাদের আবিষ্কারের টিকা এরই মধ্যে তিনটি খরগোশের দেহে প্রয়োগ করে ইতিবাচক অগ্রগতি পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ বলেন, করোনার টিকা তৈরি হয়েছে বলেই তা প্রাণীর দেহে প্রয়োগ করা গেছে।
প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা দলের প্রধান আসিফ মাহমুদ বলেন, টিকাটি খরগোশের ওপর প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা গেছে। এখন পরবর্তী প্রটোকল তৈরির কাজ চলছে। এ কাজ শেষ করেই আনুষ্ঠানিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেব।
গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে বলা হয়, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী চলমান করোনাভাইরাসের প্রকোপে সারা বিশ্বের মানুষ বিপর্যস্ত। তাই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রয়োজনে আমাদের নিয়মিত গবেষণার পাশাপাশি ‘কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ কিট, টিকা এবং ওষুধ’ আবিষ্কার সংক্রান্ত গবেষণা কর্মকাণ্ড শুরু হয়। এ প্রতিষ্ঠানের সিইও ড. কাকন নাগ এবং সিওও ড. নাজনীন সুলতানার সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে টিকা (ভ্যাকসিন) আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স বায়োইনফরম্যাটিকস টুলের মাধ্যমে পরীক্ষা করে টিকার টার্গেট নিশ্চিত করা হয়েছে। যা যৌক্তিকভাবে এ ভৌগোলিক অঞ্চলে অধিকতর কার্যকরী হবে। এ টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিকোয়েন্স যুক্তরাষ্ট্রের এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেইসে জমা দেয়া হয়েছে এবং যা এরই মধ্যে এনসিবিআইয়ে স্বীকৃত ও প্রকাশিত হয়েছে (accession number : MT676411))। সেই সূত্র ধরেই এখানে গবেষণাগারে আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনের বিশদ বিশ্লেষণের পর ল্যাবরেটরি এনিম্যাল মডেলে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে যথাযথ অ্যান্টিবডি তৈরিতে সন্তোষজনক ফলাফল এসেছে।
|
|
|
|
বাংলাদেশের অন্যতম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের আবিষ্কৃত করোনা ভ্যাকসিনের বিরাট অগ্রগতির খবর দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। তাদের ভ্যাকসিনটি প্রাথমিক এনিমেল ট্রায়ালে এন্টিবডি তৈরি করতে পেরেছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার (০২ জুলাই) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তারা এ দাবি করেন। গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের ভ্যাকসিনটি বর্তমানে যে অবস্থায় আছে সেটিকে বিরাট অগ্রগতি হিসেবেও দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এ পর্যায়ে ভ্যাকসিনটি দ্বিতীয় ধাপে এনিমেল মডেলে ট্রায়াল করা হবে। এজন্য ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ সময় লাগবে। এরপরই এটি মানব শরীরে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাওয়া যাবে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ পর ভ্যাকসিনটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাওয়ার জন্য কোম্পানিটি সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাইবে। অনুমতি পেলে তারা ট্রায়ালে যাবে।
এর আগে বুধবার (০১ জুলাই) প্রতিষ্ঠানটি দাবি করে, তারা পশুর শরীরে এই ভ্যাকসিনের সফলতা পেয়েছেন। মানবদেহেও এর সফলতা পাওয়া সম্ভব বলে আশা করছেন তারা। গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আসলে আমরা কাজ শুরু করার পর প্রাথমিকভাবে এটা নিয়ে সফল হয়েছি। এনিমেল মডেলে এটা সফল হয়েছে। এখন আমরা আশা করি মানবদেহেও এটা সফলভাবে কাজ করবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে এখন সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কাছে যাব। এরপর তাদের দেওয়া গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তী ধাপগুলো সম্পন্ন করবো৷’
বিষয়টি নিয়ে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড বুধবার একটি বিবৃতিও দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজ অনুযায়ী মঙ্গলবার (৩০ জুন) পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৫ হাজার ৭৪৩টি সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্স জমা হয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে জমা হয়েছে ৭৬টি। উক্ত সিকোয়েন্স বায়োইনফরম্যাটিক্স টুলের মাধ্যমে পরীক্ষা করে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড তাদের টিকার টার্গেট নিশ্চিত করে। যা যৌক্তিকভাবে এই ভৌগোলিক অঞ্চলে অধিকতর কার্যকরী হবে বলে আশা করছেন তারা।
প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, উক্ত টার্গেটের সম্পূর্ণ কোডিং সিকোয়েন্স যুক্তরাষ্ট্রের এনসিবিআই ভাইরাস ডাটাবেজে জমা দিয়েছেন যা ইতিমধ্যেই এনসিবিআই কর্তৃক স্বীকৃত ও প্রকাশিত হয়েছে। টিকা আবিষ্কারের বিষয়ে আরও বলা হয়, গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের গবেষণাগারে আবিষ্কৃত টিকাটির বিশদ বিশ্লেষণের পর ল্যাবরেটরি এনিমেল মডেলে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে যথাযথ এন্টিবডি তৈরিতে সন্তোষজনক ফলাফল পেয়েছেন বলে দাবি করছেন তারা।
বিষয়টি নিয়ে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হারুনুর রশিদ বলেন, ‘এই টিকাটির সুরক্ষা ও কার্যকারিতা নিরীক্ষার লক্ষ্যে আমরা ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এই সুরক্ষা ও কার্যকারিতা পরীক্ষায় সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি।’
গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের এই ভ্যাকসিনের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুম) ডা. আয়েশা আক্তার বলেন, ‘আমাদের এখনো এমন কিছু জানানো হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী তারা বিষয়টি অফিসিয়ালি চিঠি দিয়ে আমাদের জানাবে। এরপর আমরা সেটা দেখব।’
এদিকে, বাংলাদেশে নতুন করে আরও ৩ হাজার ৭৭৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট ১ লাখ ৪৯ হাজার ২৫৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেল। এছাড়া গেল ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ৪১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৮৮৮ জন। বুধবার (০১ জুলাই) দুপুরে করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
এর আগে মঙ্গলবার (৩০ জুন) জানানো হয়েছিল, দেশে ৩ হাজার ৬৮৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন এবং ৬৪ জনের মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার। ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়িয়ে এ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়।
ছুটি শেষে করোনার বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেই ৩১ মে থেকে দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেয়া হয়। তবে বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
|
|
|
|
চলতি বছরের মধ্যেই আবাসিক এলাকায় গ্যাস সংযোগ দেয়া শুরু করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সম্প্রতি প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছেন। ২০০৯ সালের ২১ জুলাই থেকে শিল্প ও বাণিজ্যি এলাকায় নতুন গ্যাস সংযোগ বন্ধ করা হয়। এরপর ২০১০ সালের ১৩ জুলাই থেকে আবাসিকেও নতুন গ্যাস-সংযোগ বন্ধ করা হয়। ২০১৩ সালের ৭ মে আবাসিকে সংযোগ দেয়া শুরু হলেও কিছুদিন পর তা আবার বন্ধ করে দেয়া হয়।
আবাসিকে গ্যাস সংযোগ চালুর বিষয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান বুধবার (০১ জুলাই) সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘বিচার-বিশ্লেষণ চলছে- কী আছে, কী লাগবে, কী দিতে হবে, কী পরিমাণ আবেদন পেন্ডিং আছে। এগুলো নিয়ে আমরা এক্সারসাইজ করছি। এরপর আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে যাব।’ তিনি এসময় বলেন, অনেকে বেশ কয়েক বছর আগে ডিমান্ড নোট জমা দিয়েছিল, এমন একটা ক্যাটাগরি আছে। কিছু আছে ডিমান্ড ইস্যু করা হয়েছিল। কিন্তু টাকা জমা হয়নি, কিছু অ্যাপ্লিকেশন ছিল, কিছু আছে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করে যাচ্ছে। সারা দেশে ছয়টি সরকারি কোম্পানি গ্যাস বিতরণ করে থাকে। এগুলো হলো- তিতাস, কর্ণফুলী, পশ্চিমাঞ্চল, জালালাবাদ, বাখরাবাদ ও সুন্দরবন।
|
|
|
|
আবু সায়েম : ভারত বাংলা উপমহাদেশের প্রখ্যাত বৌদ্ধ কীর্তনীয়া ও সাতকানিয়া উপজেলার শীলঘাটা গ্রামের কৃতি ব্যক্তিত্ব প্যারী মোহন বড়ুয়ার ছেলে বর্তমান চাঁদপুর ডিবি পুলিশের (ওসি) ও সাবেক কক্সবাজার সদর মডেল থানা এবং টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রনজিত বড়ুয়া`র মেয়ে মনীষা বড়ুয়া চৈতি চীনের "Three Gorges University" থেকে কৃতিত্বের সাথে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেছে।
শুধু তাই নয়, বিশ্বে স্বনামধন্য চীনের এই প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ‘টপ এক্সিলেন্ট ইন্টারন্যাশনাল গ্র্যাজুয়েট’ এ ৬ষ্টতম স্থান নিয়ে মনীষা এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সোমবার (২৯ জুন) সকালে চীনের Three Gorges University বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ফলাফল প্রকাশ করেন।
সদ্য এমবিবিএস পাস করা মনীষা বড়ুয়া চৈতি বলেন, আজকে এই কৃতিত্ব ও অর্জনের পেছনের কারিগর হচ্ছে আমার বাবা-মা, দাদু এবং ঠাকুরমা। তাদের আন্তরিকতা এবং আশীর্বাদে আজ আমি ডাক্তার হয়েছি। পরিবারের অনুপ্রেরণাটা আসলে অনেক বড় বিষয়। বিশেষ করে বাবা-মা’র অনুপ্রেরণা না পেলে আজ এই কৃতিত্ব অর্জন হতো না।জীবনে সফল হওয়ার পেছনে আমার বাবা রনজিত কুমার বড়ুয়ার অবদান অনস্বীকার্য। হাজারো ব্যস্ততার মাঝে তিনি আমার শারীরিক এবং পড়ালেখার প্রতিনিয়ত খুঁজ নিয়েছেন।
আর আমার আদরের ছোট ভাই চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র অভিষেক, আমাকে খুব সাহস দিয়েছে এবং ইন্সপায়ার করেছে। এইখানেই শেষ নয়, আমি চাই ভবিষ্যতে Gynecology & obstetrics নিয়ে এগুতে চাই। এরমাধ্যমে দেশের মানুষের চিকিৎসাসেবা দিতে চাই। এজন্য সকলের আশীর্বাদ প্রত্যাশা করছি।
উল্লেখ্য, এমবিবিএস পাস করা মনীষা বড়ুয়া চৈতি ২০১২ সালে ডা.খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি ও ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়ারও গৌরব অর্জন করেন । পরবর্তীতে স্কলারশিপ পেয়ে সুদূর চীনের Three Gorges University’তে ভর্তি হন। এছাড়াও ২০১৮ সালে মনীষা ‘মিস মোস্ট টেলেন্টেড’ হওয়ারও গৌরব অর্জন করেন।
বাংলাদেশের সাড়া জাগানো স্বনামধন্য সফল ওসি বর্তমানে চাঁদপুর ডিবি পুলিশে কর্মরত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রনজিত কুমার বড়ুয়া তাঁর একমাত্র মেয়ে মনীষার উত্তরোত্তর সফলতা এবং আলোকিত জীবনের জন্য সকলের কাছে আর্শীবাদ কামনা করেছেন।
|
|
|
|
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস[পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করেছে সরকার। সরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্রে তিন ক্ষেত্রে তিন ধরনের ‘কোভিড-১৯ পরীক্ষা-নিরীক্ষার ইউজার ফি হার নির্ধারণ’ করে সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে পরিপত্র জারি করা হয়। পরিপত্র অনুযায়ী, বুথ থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষার ফি ২০০ টাকা, বাসা থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষার ফি ৫০০ ও হাসপাতালে ভর্তি রোগীর নমুনা পরীক্ষা ফি ২০০ টাকা।
এতে বলা হয়, করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) আরটি-পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে নির্ণয় করা হয়। বর্তমানে এ পরীক্ষা সরকার বিনামূল্যে প্রদান করছে, ফলে কোনো উপসর্গ ছাড়াই অধিকাংশ মানুষ এ পরীক্ষা করানোর সুযোগ গ্রহণ করছেন। এমতাবস্থায় কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য অপ্রয়োজনীয় কোভিড টেস্ট পরিহার করতে অর্থ বিভাগের গত ১৫ জুনের সম্মতি অনুযায়ী আরটি-পিসিআর টেস্টের এই ফি/হার নির্ধারণ করা হয়েছে বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিপত্রে আরও বলা হয়, এ বাবদ আদায় করা রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা করতে হবে। ‘চিকিৎসা সুবিধা বিধিমালা, ১৯৭৪’ এর আওতায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত সব সুযোগ-সুবিধা বহাল থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা, দুস্থ ও গরিব রোগীদের চিকিৎসা এবং রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সংক্রান্ত সরকারি আদেশ বহাল থাকবে।
দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বিশেষায়িত হাসপাতালের পরিচালক, জেলা/জেনারেল জেলা হাসপাতালের পরিচালক/তত্ত্বাবধায়ক, সব সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাকে পরিপত্রের অনুলিপি দেয়া হয়েছে।
|
|
|
|
করোনাভাইরাস প্রথম ধরা পড়ে চীনে। এখন পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক কোটির বেশি। এতে মারা গেছে ৫ লক্ষাধিক মানুষ। এই ভাইরাস মোকাবেলায় বিশ্বের শতাধিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করছে। এর মধ্যে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন এগিয়ে আছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল।
কিন্তু সবাইকে ছাড়িয়ে এবার করোনার ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে চীন। সোমবার (২৯ জুন) এ খবর দিয়েছে ইয়াহু নিউজ। খবরে বলা হয়েছে, দেশটির সেনাবাহিনীর গবেষণা শাখা এবং স্যানসিনো বায়োলজিকসের (৬১৮৫.এইচকে) তৈরি একটি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন মানব শরীরে প্রয়োগের অনুমতি পেয়েছে।
তবে আপাতত ভ্যাকসিন শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যবহার করা হবে। স্যানসিনো বলেছে, চীনের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন গত ২৫ জুন এডি৫-এনকোভ ভ্যাকসিনটি সৈন্যদের দেহে এক বছরের জন্য প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। স্যানসিনো বায়োলজিকস এবং একাডেমি অফ মিলিটারির একটি গবেষণা ইনস্টিটিউট যৌথভাবে ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছে।
|
|
|
|
কোভিড-১৯ সংকট পরিস্থিতিতে দেড় হাজার সাংবাদিককে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে এই অনুদান দেয়ার প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন হয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান। সোমবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
হাছান মাহমুদ বলেন, মহামারী করোনাভাইরাসে দেশের সংবাদকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সংবাদ সংগ্রহ ও প্রচার করছেন। তাদের বিষয়ে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে এক হাজার ৫০০ সাংবাদিককে এককালীন ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়ার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করা হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে আরও সাংবাদিককে এ অনুদান দেয়া হবে।
এ ছাড়া এই ট্রাস্টের মাধ্যমে ২০১৯-২০ অর্থবছরে অসুস্থ, অসচ্ছল ও দুর্ঘটনাজনিত কারণে আহত ও নিহত সাংবাদিক পরিবারের মাঝে তিন কোটি ১০ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হবে। ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে এ পর্যন্ত ১০ কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে দেয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি জানান, সাংবাদিকরা যাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা টেস্ট ও চিকিৎসাসেবা পান, এ জন্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
|
|
|
|
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে যাওয়া রোগীদের শরীরে এই ভাইরাস প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি হয়েছে কি না তা দেখার জন্য বিশ্বের কোনো কোনো দেশে চলছে অ্যান্টিবডি টেস্ট। যদিও এখন পর্যন্ত গবেষণা ও পরীক্ষামূলক ব্যবহার ছাড়া এই পরীক্ষার অনুমোদন দেয়নি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা কোনো দেশ।
রোগ নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনার কাজে লাগানোর জন্য গবেষণার অংশ হিসেবেই চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ যেসব দেশে সংক্রমণের হার খুব বেশি ছিল সেখানেই অ্যান্টিবডি টেস্ট ব্যবহৃত হয়েছে সংক্রমণের মাত্রা নিরূপণে। পাশের দেশ ভারতেও অ্যান্টিবডি টেস্ট চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এখন বাংলাদেশও শুরু করেছে এই পরীক্ষা। বিশেষ করে পরীক্ষামূলকভাবে যাদের প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হচ্ছে তাদের জন্য এই অ্যান্টিবডি টেস্ট অপরিহার্য।
গত ২৪ জুন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর গবেষণা ও পরীক্ষামূলক ব্যবহারের জন্য অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমতি দিয়েছে। একই সঙ্গে এই পরীক্ষার কিট আমদানির অনুমতিও দিয়েছে অধিদপ্তর। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) অনুমোদিত মান অনুসরণের কথা বলা হয়েছে। এফডিএ অনুমোদিত কিটের ন্যূনতম সেনসিটিভিটি ৯৩.৮ ও স্পেসিফিসিটি ৯৫.৬ শতাংশ। গতকাল শনিবার নাগাদ সাড়ে তিন হাজার কিট ঢাকায় এসে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।
গত ২১ জুন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের টেকনিক্যাল কমিটির সভায় বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবডি টেস্ট কিটের ন্যূনতম সেনসিটিভিটি ৯০ শতাংশ ও স্পেসিফিসিটি ৯৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। অ্যান্টিবডির পাশাপাশি অ্যান্টিজেন টেস্টেরও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের টেকনিক্যাল কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী দেশে গবেষণা ও পরীক্ষামূলক কাজে অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’
যদিও করোনা মোকাবেলায় তৈরি করা জাতীয় গাইডলাইনে আগেই অ্যান্টিবডি টেস্টের কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশে অ্যান্টিবডি টেস্ট নিয়ে অভিমত ব্যক্ত করেছেন এবং এখনো মাঝেমধ্যেই করছেন দেশের অনেক বিশেষজ্ঞ। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নিজেরা একটি অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট উদ্ভাবন করেছে। এর পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হওয়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যেও এটা নিয়ে কৌতূহল দেখা দেয়। অনুমতির নানা প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার পর পরীক্ষা করে পর্যাপ্ত মান না থাকায় সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ওই কিট আপাতত অনুমোদন দেয়নি।
অন্যদিকে চলমান আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে আগ্রহী সবার পরীক্ষা করতে সক্ষম না হওয়ায় সরকার সহজ ও গ্রহণযোগ্য অন্য পদ্ধতি অবলম্বনের বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। এ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেন পরীক্ষার বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। এ ছাড়া দেশে আগে থেকেই যক্ষ্মা নির্ণয়ে ব্যবহৃত ভিন্ন ধরনের আরটি-পিসিআর মেশিন বা জিন এক্সপার্ট ব্যবহার নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে।
সংক্রমণের ১০০ দিন পার করার পর দেশে মানুষের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি কী পর্যায়ে তা দেখার জন্য অ্যান্টিবডি টেস্টের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও বিশেষজ্ঞদের মধ্যেও ভিন্নমত রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, এখনই দেশে অ্যান্টিবডি টেস্ট সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া জরুরি। আবার কেউ বলছেন, কোনোভাবেই এই পরীক্ষা সবার জন্য উন্মুক্ত করা ঠিক হবে না। সেটা করলে বিপদ আরো বাড়বে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনির্ণয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিশ্বের কোথাও অ্যান্টিবডি টেস্ট সবার জন্য উন্মুক্ত নয়। এটি কেবলই গবেষণা কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের দেশে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটির ব্যবহার শুরু হয়েছে পরীক্ষামূলক কাজে। এর পাশাপাশি সরকার এর ব্যাপ্তি আরো বাড়িয়ে বিভিন্ন পেশার লোকদের ও ক্লাস্টারে অ্যান্টিবডি টেস্ট চালুর ব্যাপারে অনেকটা এগিয়েছে। এটা যত দ্রুত করা যাবে ততোই রোগের বিস্তার কোন পর্যায়ে আছে তা পর্যবেক্ষণ সহজ হবে।’ তিনি বলছেন, বিদেশি কিটের খরচ অনেক বেশি। দেশে গণস্বাস্থ্যের উদ্ভাবিত কিটের মান উন্নয়ন করা গেলে তা আরো সহজ ও ন্যূনতম খরচে পাওয়া সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ মেডিসিন সোসাইটির মহাসচিব ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঢাকা মেডিক্যালে আমরা পরীক্ষামূলকভাবে যাদের প্লাজমা থেরাপি দিচ্ছি তাদের আগে অ্যান্টিবডি চেস্ট করে নিচ্ছি। ঢাকা মেডিক্যাল ছাড়াও আরো যেসব প্রতিষ্ঠানে প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হচ্ছে সেখানেও এটা ব্যবহার হচ্ছে। তবে এর বাইরে ঢালাওভাবে এটা উন্মুক্ত করা হলে বিপদ আরো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেদিকে নজর রেখেই কোথাও এটা উন্মুক্ত করা হয়নি।’
কিটের মান বিষয়ে জানা যায়, সুইজারল্যান্ডে ব্যবহার করা অ্যান্টিবডি কিটের সেনসিটিভিটিও ১০০ শতাংশ ও স্পেসিফিসিটি ৯৯.৮ শতাংশ। ব্রিটেনের কিটের সেনসিটিভিটিও ১০০ শতাংশ ও স্পেসিফিসিটি ৯৮.৭ শতাংশ। বাংলাদেশে গণস্বাস্ব্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কিটের সেনসিটিভিটি ৭০ শতাংশের নিচে বলে সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর গত ২৫ জুন এক চিঠির মাধ্যমে অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে। সেই সঙ্গে ওই চিঠিতেই মানোন্নয়ন করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সরকারের অনুমোদন ছাড়াই গোপনে কিছু অ্যান্টিবডি কিট দেশে এনেছেন কেউ কেউ, যা প্লাজমা থেরাপির জন্য ব্যবহার করা হয় বলে জানায় একাধিক সূত্র।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইক্যুইপমেন্টস আমদানিকারক সোসাইটির মহাসচিব মো. কামরুজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সরকার দেরিতে হলেও অ্যান্টিবডি কিট আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। সে অনুসারে আমরা আমদানি শুরু করে দিয়েছি। ইতালি থেকে গতকাল পর্যন্ত সাড়ে সাত হাজার কিট এসেছে। এ ক্ষেত্রে এফডিএ অনুমোদিত মান ফলো করা হচ্ছে।’
|
|
|
|
করোনা সংক্রমনের সন্দেহ হলে বাসা বা বাড়ি থেকেই পরীক্ষা করানো যাবে- সাধারণ মানুষের জন্য সুবিধাটি দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তবে এভাবে নমুনা পরীক্ষা করাতে গেলে নির্ধারিত ফি দিতে হবে। সরকারি হাসপাতাল ও বুথে গিয়েও নমুনা পরীক্ষা করানো যাবে আগের মতো। দুই ক্ষেত্রেই ফি দিতে হবে। এখন পর্যন্ত সরকার বিনা পয়সায় এই স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে। কর্মকর্তারা বলছেন, বিদেশ থেকে আমদানি করা প্রতিটি কিটের দাম পড়ছে তিন হাজার টাকা। যদি বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়, সে ক্ষেত্রে সব মিলিয়ে একটি পরীক্ষার পেছনে সরকারের মোট খরচ পড়ে যায় পাঁচ হাজার টাকার মতো। তাই ফি যেটা নেয়া হবে তাকে নামমাত্রই বলতে চাইছে কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে,সরকারি হাসপাতাল ও বুথে গিয়ে নমুনা পরীক্ষা করালে ফি দিতে হবে ২০০ টাকা। আর বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করালে ৫০০ টাকা ফি দিতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিয়ে এই ফি নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করবে বলে জানা গেছে।
চলতি সপ্তাহেই প্রজ্ঞাপন জারি
জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কারো শরীরে করোনাভাইরাস আছে কি না, তা জানার জন্য আমরা এখন যে নমুনা পরীক্ষা (আরটি-পিসিআর টেস্ট) করছি, তাতে কোনো টাকা নেওয়া হয় না। তবে নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে আমরা একটি ফি নির্ধারণ করেছি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। আশা করছি, চলতি সপ্তাহের মধ্যে ফি নির্ধারণ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’
করোনা পরীক্ষার জন্য কেন ফি নির্ধারণ করা হচ্ছে—এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, দুই কারণে ফি নির্ধারণের পথে হাঁটছে সরকার।
একাধিক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন, করোনার কারণে সরকারের আয় কমে গেছে। একেকটি নমুনা পরীক্ষার পেছনে যে টাকা খরচ হয়, বাংলাদেশের মতো দেশে এটি দুই থেকে তিন মাস বিনা মূল্যে করা সম্ভব। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে সম্ভব নয়। দেশে যে হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদে নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। এ জন্য সরকার একটি ফি নির্ধারণ করতে যাচ্ছে। দ্বিতীয় কারণ হলো, নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে এর অপব্যবহার হচ্ছে। অনেকের শরীরে করোনার উপসর্গ না থাকলেও সন্দেহ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা করাচ্ছে। সন্দেহ হলে পরীক্ষা নিরুৎসাহ করার জন্যও সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।
প্রতিটি কিটের দাম তিন হাজার টাকা
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, বিদেশ থেকে আমদানি করা প্রতিটি কিটের দাম পড়ছে তিন হাজার টাকা। যদি বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়, সে ক্ষেত্রে সব মিলিয়ে একটি পরীক্ষার পেছনে সরকারের মোট খরচ পড়ে যায় পাঁচ হাজার টাকার মতো। প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজার থেকে ১৪ হাজার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে শনাক্তের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার। বাকিদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে না। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ টাকা অপচয় হয়। সে জন্য যাদের শরীরে করোনার উপসর্গ আছে এবং কেউ যদি মনে করে করোনার উপসর্গ থাকার আশঙ্কা প্রবল সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি নমুনা পরীক্ষা করাতে যাবে।
তবে পাশের দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল এবং আফ্রিকার দেশগুলোতে এখনো তাদের নাগরিকদের বিনা মূল্যেই করোনার নমুনা পরীক্ষা করে যাচ্ছে। ভারতে সরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবে করোনা পরীক্ষায় কোনো টাকা নেওয়া হয় না। বেসরকারিভাবে সাড়ে চার হাজার টাকা নেওয়া হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বেশি বেশি পরীক্ষার ওপর জোর দিয়েছে। কারণ পরীক্ষা বেশি হলে করোনা রোগী শনাক্ত সহজ হয় এবং তাকে আইসোলেশনে নেওয়া যায়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, সরকারি হাসপাতালে গিয়ে নমুনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিতে গত সপ্তাহে চিঠি পাঠানো হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সিরাজুন নূর চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘করোনার নমুনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রস্তাব পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা আমাদের মতামত জানিয়েছি।’
বিনা মূল্যে পরীক্ষার সুযোগে অপব্যবহার?
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, বর্তমানে সারা দেশে ৬৬টি ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৪৮টি সরকারি, ১৮টি বেসরকারি। প্রতিদিন যে পরিমাণ নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে, তার প্রায় ৯০ শতাংশ সরকারি ল্যাবে হচ্ছে। দেশে করোনা সংক্রমণের পর থেকে এখন পর্যন্ত সাত লাখ ১২ হাজার ৯৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে এক লাখ ৩৩ হাজার ৯৭৮ জন। অর্থাৎ মোট টেস্টের ১৮.৮১ শতাংশ পজিটিভ এসেছে। এসব তথ্য তুলে ধরে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বিনা মূল্যে পরীক্ষা করার সুযোগ থাকায় এর অপব্যবহার হচ্ছে। প্রতিদিন যে পরিমাণ নমুনা পরীক্ষা হয়, তার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের শরীরে ন্যূনতম উপসর্গ থাকে না। এতে প্রকৃত আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা করতে বিলম্ব হচ্ছে। তাঁরা জানান, পরীক্ষার ফির এই টাকা রাষ্ট্রের কোষাগারে চলে যাবে। সেই টাকা সরকার চাইলে স্বাস্থ্য খাতেই খরচ করতে পারবে।
‘টাকা নেওয়া কি সংবিধানসম্মত?’
তবে ফি নেওয়া ঠিক হবে না বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অসম্ভব, হতেই পারে না। এখানে যদি টাকার বিষয়টা আসে, তাহলে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ পরীক্ষা করাতে আসবে না। বড়লোকেরা যাদের দরকার, তারা আসবে।’ তিনি প্রশ্ন করেন, ‘টাকা নেওয়ার বিষয়টা কি আমাদের সংবিধানের সঙ্গে যায়?’
|
|
|
|
করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ নিয়ে বিভিন্ন দেশ গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনসহ কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যে এই রোগের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু করেছে। এর মধ্যে চীনা ভ্যাকসিন প্রথম ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে। তাদের ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ট্রায়াল বাংলাদেশে হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ শুক্রবার (২৬ জুন) এ তথ্য জানিয়েছেন। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের আয়োজনে ভার্চুয়াল কনফারেন্সে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘চীনে আবিষ্কৃত করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়াল বাংলাদেশে হতে পারে। এই ট্রায়ালের সূত্র ধরে বাংলাদেশেও এর উৎপাদন শুরু হতে পারে। এটা বাংলাদেশের মানুষের জন্য করোনা মোকাবিলায় আরেক ধাপ সাফল্য বয়ে আনবে।’
ডা. আবুল কালাম আজাদ করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, ‘আগে দেশে আক্রান্ত একজন থেকে আরও দু’জনের বেশি হারে এই ভাইরাস ছড়াতে পারত। কিন্তু এখন সেই রিপ্রডাকশন রেট বা আর-রেট নেমে এসেছে ১.০৫-এ। এটা খুবই ভালো লক্ষণ। এখন নিচে নামাতে পারলে দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমে যাবে। তাছাড়া এখনও প্রতিদিন সংক্রমণের যে সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে তা অনেকটা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।’
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩ হাজার ৮৬৮ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৩০ হাজার ৪৭৪ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪০ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ হাজার ৬৬১ জনে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সর্বশেষ তথ্যে বলা হয়েছিল, ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩ হাজার ৯৪৬ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এ নিয়ে ওই দিন দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ২৬ হাজার ৬০৬ জনে। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় ৩৯ জনের মৃত্যু হয়। এ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল ১ হাজার ৬২১ জনে।
শুক্রবার (২৬ জুন) দুপুরে করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড আছে ৫৩ জনের। সে তথ্য জানানো হয় ১৬ জুনের বুলেটিনে। আর সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড আছে ৪ হাজার ৮ জনের। এ তথ্য জানানো হয় ১৭ জুনের বুলেটিনে।
বুলেটিনে বরাবরের মতো করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান ডা. নাসিমা। বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হলেও প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার। ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়িয়ে এ ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়। ছুটি শেষে করোনার বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যেই ৩১ মে থেকে দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেয়া হয়। তবে বন্ধ রাখা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এদিকে করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ এ যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে আক্রান্তের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৫০০ জন। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটিতে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের সংখ্যা। এদিন মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৪৩০ জনের। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন এর খবরে বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহর টেক্সাস, আলাবামা, অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, আইডাহো, মিসিসিপি, মিসৌরি, নেভাডা, ওকলাহোমা, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া ও ওয়াইমিং অঙ্গরাজ্যে আবারও ভয়াবহভাবে করোনা শনাক্ত শুরু হয়েছে।
প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ২৫ লাখেরও বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সরকারি হিসেবে এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষের। সেরে উঠেছেন সাড়ে ১০ লাখ ৫২ হাজার। করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে।
|
|
|
|
নিজস্ব প্রতিবেদক: পূর্বাচলে ৯৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী সিকদার গ্রুপ। ২০১৮ সালে ‘সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিকট’ (সিবিডি) নির্মাণের লক্ষে পূর্বাচল নতুন টাউনশিপ প্রকল্পের ১৯ সেক্টরে মোট ১১৪ একর জমি বরাদ্দ পায় পাওয়ার প্যাক হোল্ডিংস লিমিটেড এবং কাজিমার করপোরেশন। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৬ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে ৬০ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে। আর নির্মাণের প্রথম দুই বছরে নির্মাণ সামগ্রী বাবদ ৩০,০০০ কোটি টাকার খরচ করা হবে।
সোমবার দুপুরে পূর্বাচল উপশহরের পূর্বাচল নিউটাউন এরিয়া ‘সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিকট’ (সিবিডি) প্রকল্প পরিদর্শন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। এসময় সিকদার গ্রুপের চেয়ারম্যান জয়নুল হক সিকদার, জেডএইচ সিকদার ওম্যানস মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের চেয়ারম্যান মিসেস মনোয়ারা সিকদার, সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তারা প্রকল্পের অগ্রগতি ঘুরে দেখেন।
এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, এমনটাই মনে করেন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা। ১১১ তলা বিশিষ্ট আইকনিক লিগ্যাসি টাওয়ারসহ মোট ৪২টি আকাশচুম্বী স্থাপনা এখানে রাখা হবে। যেখানে ৯৬ তলাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। আর ৭১ তলা বিশিষ্ট ভবনটি হবে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের স্মৃতি নিদর্শন। এছাড়া ৫২তলা সুউচ্চ ভবনটি তুলে ধরা হবে ১৯৫২ সালের ত্যাগ ও মহিমার নিদর্শন তুলে ধরা হবে। ১১৪ একর জমির আয়তন সম্পন্ন পুরো প্রকল্পটি একটি আধুনিক ও উচ্চ প্রযুক্তি সুরক্ষা প্রাচীর স্থাপন করা হবে। সর্বোপরি এ মহাযোগ্যটি দ্রুত বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন উপস্থিত প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
|
|
|
|
অনলাইন ডেস্ক: বর্তমানে চীনের বাইরে বিভিন্ন দেশে তাণ্ডব চালাচ্ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। এই ভাইরাসের প্রকোপে এখন ইউরোপের দেশ ইতালি যেন এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। তবে ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীনের সেই উহান বলা যায় এখন করোনামুক্তি। কেননা, টানা তিন দিন সেখানে কোনও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ধরা পড়েনি। ফলে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে সেখানকার জনজীবন।
সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে শহরের তল্লাশিচৌকিগুলো। এসব চৌকি বসানো হয়েছিল মানুষের চলাচল ঠেকাতে। উহানের এই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসাকে বিশ্বব্যাপী বড় অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর এই অর্জন উদযাপন করছে উহানবাসী। আতশবাজি পুড়িয়ে তল্লাশিচৌকি অপসারণ উদযাপন করছে শহরটির অনেক অধিবাসী। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর গত জানুয়ারি মাসে উহান শহর লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এরপরও মানুষ যাতে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করে ভাইরাসটি ছড়াতে না পারে, সে জন্য তল্লাশিচৌকি বসানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে এমনটা জানিয়ে ইতোমধ্যে উহানে স্থাপিত ১৬টি অস্থায়ী হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। চীনের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আসা চিকিৎসক, নার্স ও স্বেচ্ছাসেবীরা নিজ নিজ প্রদেশে চলে গেছেন। মানুষ কাজে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে উহানের তল্লাশিচৌকি অপসারণ। তবে শহরের বাইরে যাওয়ার ওপর এখনো কড়াকড়ি অব্যাহত আছে।
এদিকে, চীনে ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আসলেও এখনও গোটা বিশ্ব আতঙ্কে কাঁপছে। এরই মধ্যে চীনের বাইরে বিশ্বের ১৮৭টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী ভাইরাস। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ৬১৩ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৩ হাজার ৫০ জনের। চীনের উহান থেকে এই ভাইরাসের উৎপত্তি হলেও তা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে ইতালিতে গিয়ে। বর্তমানে ইউরোপের দেশটিতে এই ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮২৫ জনে। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ৫৩ হাজার ৫৭৮ জন।
আর চীনে মোট আক্রান্ত হয়েছে ৮১ হাজার ৫৪ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ২৬১ জন। সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, ওয়াল্ড ওমিটার
|
|
|
|
|
|
|
|